আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিশরের সিনাই প্রদেশে মসজিদে ভয়াবহ বোমা ও বন্দুক হামলার ঘটনায় ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি। শুক্রবার উত্তরাঞ্চলের আল রাওদা মসজিদে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হামলায় ২৩৫ জন নিহত এবং ১৩০ জন আহত হয়। এখন পর্যন্ত কোন গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার না করায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এ হামলা চালাতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে পুলিশ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে প্রার্থনারত মুসল্লিদের উপর নির্বিচারে বোমা হামলা ও গুলি বর্ষণে রক্তাক্ত হয় সিনাই প্রদেশের আল রাওদা মসজিদ। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, অন্তত দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মসজিদের পাশে লুকিয়ে থাকা বন্দুকধারীরা মুসল্লিদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। মসজিদটিতে সেসময় নিরাপত্তাবাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নামাজরত থাকায় তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘১০ থেকে ২০ জন বাইরে থেকে আকস্মিক মসজিদের মধ্যে প্রবেশ করে গুলি ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।মুহূর্তের সব ধ্বংস করে দেয়। চারপাশে মানুষের আর্তনাদ শুনতে পাই আমি। দেখি অনেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছে। সেসময় আমি মাটিতে লুটিয়ে ছিলাম।’
আহত শতাধিক মানুষকে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মরত চিকিৎসকদের। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
ঘটনার পর টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে কঠোরভাবে সন্ত্রাসবাদ দমনের অঙ্গীকার করেছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। এছাড়া নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেবার কথা জানান তিনি।
সিসি বলেন, ‘ভয়াবহ এ হামলায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। এই নারকীয় হামলার দ্বারা আমাদের ধর্ম, শক্তি এবং ঐক্য নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। এসব হামলা প্রতিহত করতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
নিরীহ বেসামরিক নাগরিকের ওপর এ ধরনের বর্বর এবং নৃশংস হামলা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না উল্লেখ করে সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের ওপর গুরুত্বারোপ করে টুইট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া ভয়াবহ এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে,রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ বিশ্ব নেতারা।
ইসরাইলের তেল আবিবের মিউনিসিপ্যাল হলে মিশরের পতাকা তুলে হতাহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। এদিকে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের বাতি বন্ধ করে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে মিশরে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। ২০১৩ সালে সেনা অভ্যুত্থানে মিসরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হবার পর থেকেই দেশটিতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। (সময়নিউজ.টিভি)